ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে ছড়িয়ে পড়া 'শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী' মিথ্যা, জানালো এএফপি
- By Jamini Roy --
- 21 November, 2024
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, "শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।" কিন্তু ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বিষয়টি যাচাই করে জানিয়েছে, ট্রাম্প এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং তার সঙ্গে এই দাবি সম্পর্কিত কোনো সাক্ষাৎকারও ছিল না। এএফপি বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে, যেখানে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, ট্রাম্প পিবিডি পডকাস্টের একটি সাক্ষাৎকারে এই বক্তব্য দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ নভেম্বর ফেসবুকে বাংলা ভাষায় একটি পোস্টে দাবি করা হয়, "পিবিডি পডকাস্টে ট্রাম্প বলেছেন, শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।" সেই পোস্টে ট্রাম্পের ছবি ছিল, যেখানে তার সাথে পডকাস্টের উপস্থাপক প্যাট্রিক বেট-ডেভিড আছেন। ছবির ওপর বাংলায় লেখা ছিল, "আমি মনে করি হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ট্রাম্প।"
তবে, এএফপি তদন্তে জানায়, ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়নি। সাক্ষাৎকারের শিরোনাম ছিল "ডোনাল্ড ট্রাম্প গেটস ইমোশোনাল-স্পিকস অন ট্যারিফস, ওবামা অ্যান্ড ইরান", এবং ১ ঘণ্টা ২৬ মিনিটের ভিডিওতে বাংলাদেশ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ট্রাম্প।
এএফপি আরো জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ঘোষণা করেন যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। তবে, রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যের পর মিথ্যা দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প শেখ হাসিনার পদত্যাগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এছাড়া, ৩১ অক্টোবর ট্রাম্প তার ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানালেও শেখ হাসিনার সরকারের বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেননি। ট্রাম্পের ওই পোস্টে শুধু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও লুটপাটের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু কোনো রাজনৈতিক মন্তব্য করা হয়নি।
এএফপি উল্লেখ করেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর আগেও এমন মিথ্যা দাবিগুলি ছড়িয়েছে, যেখানে বলা হয়, ট্রাম্প বলেছেন, "যেহেতু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।" এই দাবিটি মিথ্যা এবং কোনো প্রমাণ নেই যে ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেছেন।
এমন এক পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয় যখন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, "শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তিনি দেখেননি," যার ফলে হাসিনার পদত্যাগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই মন্তব্যের পরই বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেন।
এফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, "এ ধরনের মিথ্যা তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো এক ধরনের ভুল ধারণা তৈরি করছে, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।"